
বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭
জেনে নিন ভুমি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পর্চা, দাগ, খতিয়ান, জমা খারিজ, নামজারি, ও দলিল সম্পর্কে সব জানুন।
“
পর্চা” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত প্রস্তত করার
পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া
খতিয়ানের যে অনুলিপি ভুমি
মালিকদের প্রদান করা হয় তাকে “মাঠ
পর্চা” বলে। এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/
রাজস্ব কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার
পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে
তাহলে তা শোনানির পর
চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর
চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে“পর্চা”
বলে।
“নামজারী” কাকে বলে?
ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা
যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে
নতুন মালিকের নাম সরকারি
খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে
নামজারী বলা হয়।
“জমা খারিজ”কাকে বলে?
যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে
নতুন সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে।
অন্য কথায় মূল থেকে কিছু জমির অংশ
নিয়ে নতুন জোত বা সৃষ্টি করাকে
জমা খারিজ বলে।
“খতিয়ান” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের
মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত
করা হয় তাকে “খতিয়ান”
বলে।“খতিয়ান” প্রস্তত করা হয় মৌজা
ভিত্তিক। আমাদের দেশে CS, RS, SA
এবং সিটি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এসব
জরিপকালে ভূমি মালিকের তথ্য
প্রস্তত করা হয়েছে তাকে “খতিয়ান”
বলে। যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান
“মৌজা” কাকে বলে?
যখন CS জরিপ করা হয় তখন থানা
ভিত্তিক এক বা একাধিক গ্রাম,
ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লা আলাদা করে
বিভিন্ন এককে ভাগ করে ক্রমিক
নাম্বার দিয়ে চিহ্তি করা হয়েছে।
আর বিভক্তকৃত এই প্রত্যেকটি একককে
মৌজা বলে।
“তফসিল” কাকে বলে?
জমির পরিচয় বহন করে এমন বিস্তারিত
বিবরণকে “তফসিল” বলে। তফসিলে,
মৌজার নাম, নাম্বার, খতিয়ার
নাম্বার, জমির চৌহদ্দি, জমির
পরিমাণ সহ ইত্যাদি তথ্য সন্নিবেশ
থাকে।
“দাগ” নাম্বার কাকে বলে?
যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন
মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা
চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে
প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা
আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই
নাম্বারকে নাম্বার বলে। একেক
নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি
থাকতে পারে। মূলত, নাম্বার অনুসারে
একটি মৌজার অধীনে ভূমি
মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল
দিয়ে সরেজমিন প্রর্দশন করা হয়।
“ছুটা দাগ” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে প্রাথমিক অবস্থায়
নকশা প্রস্তুত অথবা সংশোধনের সময়
নকশার প্রতিটি ভূমি এককে যে
নাম্বার দেওয়া হয় সে সময় যদি কোন
নাম্বার ভুলে বাদ পড়ে তাবে ছুটা
বলে। আবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি
দুটি একত্র করে নকশা পুন: সংশোধন করা
হয় তখন যে নাম্বার বাদ যায় তাকেও
ছুটা বলে।
“আমিন” কাকে বলে?
ভূমি জরিপের মাধ্যমে নক্সা ও প্রস্তত ও
ভূমি জরিপ কাজে নিযুক্ত কর্মচারীকে
আমিন বলে।
“খাজনা” ককে বলে? সরকার বার্ষিক
ভিত্তিতে যে প্রজার নিকট থেকে
ভূমি ব্যবহারের জন্য যে কর আদায় করে
তাকে খাজনা বলে।
“দাখিলা” কাকে বলে?
ভূমি কর/খাজনা আদায় করে যে
নির্দিষ্ট ফর্মে ( ফর্ম নং১০৭৭) ভূমি কর/
খাজনা আদায়ের প্রমান পত্র বা রশিদ
দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলা হয়।
DCR কাকে বলে?
ভূমি কর ব্যতিত আন্যান্য সরকারি
পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত
ফর্মে (ফর্ম নং ২২২) রশিদ দেওয়া হয়
তাকে DCR বলে।
“কবুলিয়ত” কাকে বলে?
সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবস্ত
দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে
খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র
দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।
“নাল জমি” কাকে বলে?
২/৩ ফসলি সমতল ভূমিকে নাল জমি বলা
হয়।
“খাস জমি” কাকে বলে?
সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের
আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে
কালেক্টর বা ডিসি তত্ত্বাবধান
করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে।
“চান্দিনা ভিটি” কাকে বলে?
হাট বাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী
অকৃষি জমির যে অংশ প্রজার প্রতি
বরাদ্ধ দেওয়া হয় তাকে চান্দিনা
ভিটি বলে।
“ওয়াকফ” কাকে বলে?
ইসলামি বিধান অনুযায়ী কোন ভূমি
তার মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজ
কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ভার বহন
করার উদ্দেশ্যে কোন দান করাকে
ওয়াকফ বলে
“মোতয়াল্লী” কাকে বলে? যিনি
ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও
তত্ত্বাবধান করেন তাকে
মোতওয়াল্লী বলে। ওয়াকফ প্রশাসকের
অনুমতি ব্যতিত মোতওয়াল্লী ওয়াকফ
সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে না।
“দেবোত্তর” সম্পত্তি কাকে বলে?
হিন্দুধর্ম মতে, ধর্মীয় কাজের জন্য
উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোত্তর সম্পত্তি
বলে।
“ফারায়েজ” কাকে বলে?
ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত
ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও
প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।
“ওয়ারিশ” কাকে বলে?
ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী। ধর্মীয়
বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল
না করে মৃত্যু বরণ করলে তার স্ত্রী,
সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে
যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে
মালিক হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন এমন
ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে।
“সিকস্তি” কাকে বলে?
নদী ভাংঙ্গনের ফলে যে জমি নদী
গর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাকে
সিকন্তি বলে। সিকন্তি জমি যদি ৩০
বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়ন্তি হয়
তাহলে সিকন্তি হওয়ার প্রাক্কালে
যিনি ভূমি মালিক ছিলেন তিনি বা
তাহার উত্তরাধিকারগন ওই জমির
মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য
হবেন।
“পয়ন্তি” কাকে বলে?
নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে
জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়ন্তি বলে।
“দলিল” কাকে বলে?
যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য
হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা
হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান
মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং
বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য
যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি
করেন সাধারন ভাবে তাকে দলিল
বলে।

এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন